উকিল পাড়ার বিখ্যাত উকিল সাহেব হাসু মিয়ার ভাইরা বিদেশ থেকে তার জন্য একটা দামী ঘড়ি উপহার হিসাবে পাঠালেন। হাসু মিয়া খুব খুশি হলেন। পরের দিন সেই ঘড়ি পড়ে কোর্টে গেলেন।
ক্যান্টিনে
চা খেতে গিয়ে তার কলিগ সেটা দেখতে পেয়ে বললঃ ভাই, আপনার ঘড়িটা তো খুব
সুন্দর। অনেক দাম মনে হয়?
হাসু
মিয়াঃ জ্বি ভাই, বিদেশ থেকে আমার ভাইরা পাঠিয়েছে।
তাদের
এ কথাবার্তা পাশের টেবিলে বসা এক ঠগবাজ শুনে ফেলল। তারপর বাকিটা ইতিহাস।
হাসু
মিয়া তার প্রিয় ঘড়িটা পরে প্রতি দিন কোর্টে যান। একদিন অতি ব্যস্ততার কারণে
তাড়াহুড়া করতে গিয়ে ঘড়িটা পড়ে আসতে ভুলে গেলেন। ঠগবাজ এমন একটা দিনেরই অপেক্ষায়
ছিল।
সেই
ঠগবাজ হাতে আস্ত একটা দেশি মোরগ নিয়ে উকিল সাহেবের বাড়ি গিয়ে হাজির। দরজায় নক করলে
উকিল সাহেবের স্ত্রী বের হয়ে আসেন। মোরগটা উকিল সাহের স্ত্রীকে দিয়ে
ঠগবাজ
বললঃ ম্যাডাম, স্যার আজকে ঘড়ি পড়ে যেতে ভুলে গেছেন। তাই স্যার আমাকে মোরগটা দিয়ে
পাঠিয়েছেন আর ঘড়িটা নিয়ে যেতে বলেছেন।
উকিল
সাহেবের স্ত্রীঃ কিন্তু আমি তো তোমাকে চিনি না।
ঠগবাজঃ
আমি স্যারের অফিসের নতুন পিয়ন।
উকিল
সাহেবের স্ত্রী একটু মোটা মোটাহুঁস টাইপের। তিনি চিন্তা করলেন কথা সত্যি না
হলে কি আর মোরগ নিয়ে আসতো। আর ঘড়ি পড়ে যেতে ভুলে গেছেন সেটাই বা লোকটা কিভাবে
জানবে? তাই রসিক ঠগবাজের কথায় বিশ্বাস করে তাকে ঘড়িটা দিয়ে দিলেন।
দুপুরে
খেতে এসে উকিল এ কথা জানতে পেরে খুব আফসোস করলেন। তবে মোরগটা পেয়ে একটু সান্তনা
পেলেন যাক ঘড়ির বিনিময়ে একটা মোরগ তো পাওয়া গেছে।
কোর্টে
যাওয়ার আগে তিনি মোরগটা রান্না করে রাখতে বললেন এই ভেবে যে রাতে মোরগের গোস্ত দিয়ে
ভাত খাবেন।
উকিল
সাহেব কোর্টে যাওয়ার কিছুক্ষন পরই সেই ঠগবাজের চেলা এসে উপস্থিত। সে বলল,
আম্মা সকালে যে ঠগবাজটা স্যারের ঘড়ি চুরি করেছিল সে একটু আগে ধরা পরেছে। কিন্তু
ব্যাটা কিছুতেই স্বীকার করছে না। তার চুরি প্রমানের জন্য মোরগটা দরকার।
চোর
ধরা পড়েছে শুনে উকিল সাহেবের স্ত্রী খুব খুশি হয়ে কোন কিছু না ভেবেই তাড়াতাড়ি
মোরগটা দিয়ে দিলেন।
রাতে
উকিল সাহেব বাড়ি ফিরে ঘটনা শুনে পুরাই ক্রাশ খেয়ে গেলেন।